test

কাফির রাষ্ট্রে মুসলিম অভিবাসন ও মন্ত্রীত্ব নিয়ে কিছু কথা


*****
এই সময়ের অনেক মুসলিম তাদের প্রতি পশ্চিমের বিশেষত বৃটিশদের কথিত কৃপায় বেশ তুষ্ট৷ আমার মতে এটি ঈমানহীনতা ও হীনম্মন্যতা প্রসূত চিন্তা৷ বৃটেনসহ পশ্চিমের কাফির দেশগুলো মুসলিমদের অভিবাসনের সুযোগ দিয়েছে নিজেদের স্বার্থে এবং তা বিশ্বনেতৃত্বের আসন থেকে মুসলিমদের পতন হওয়ার পরে৷ ১৭৫৭ সালে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার মুসলিম শাসক নবাব/গভর্ণর সিরাজদ্দৌলা ঈমান ও আত্মমর্যাদাবোধহীন মীর জাফরদের মত মুসলিমদের কারণে বৃটিশ বেনিয়া বাহিনীর হাতে পরাজিত হবার পর মুসলিমদের তুষ্ট রাখতে বৃটিশ সরকার কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে৷ ১৭৮১ সালে বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির তদনীন্তন গভর্নর ওয়ারেন হেস্টিংস এই মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন৷ অবশ্য তাদের কাছে এটি মোহামেডান কলেজ নামে অভিহত হতো। 
তো বৃটিশদের এমন উদ্যােগ থেকে বুঝা যায়, তারা দখলকৃত দেশগুলোর অধিবাসীদেরকে জোরপূর্বক খ্রীষ্টান বানানোর নীতিতে বিশ্বাসী ছিল না৷ তারা এখানে তাদের পাদ্রীদের আমদানি ও তাদের কাজে অর্থায়নের মাধ্যমেই খ্রীষ্টাবাদ প্রচার করেছিল৷ আর এতে মূলত নিম্নবর্ণের হিন্দুরাই খ্রীষ্টান হয়েছিল৷ মুসলিমদের খ্রীষ্টান হওয়ার হার ছিল খুবই কম৷ তবে চৈন্তিক ভাবে তাদের অনেকে বৃটিশদের গোলামীতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিল৷
-
কারো মতে, বৃটিশরা যেহেতু রহিত হওয়া ও ভ্রান্তিযুক্ত খ্রীষ্টধর্মের অনুসারী ছিল, তাই তারা প্রতারণার মাধ্যমে বিজিত অঞ্চলের অধিবাসীদের মাঝে ব্যাপক ভাবে খ্রীষ্টধর্ম প্রচার করার গরজ অনুভব করেনি এবং করলেও সেটি সফল হয়নি৷ 
কিন্তু ভারত শাসনকারী মুসলিমরাতো প্রতারণার পরিবর্তে যুদ্ধজয়ের মাধ্যমেই ভারত শাসন করেছিল এবং তাদের ধর্ম ইসলামতো রহিত ও ভ্রান্তিযুক্ত ছিল না৷ তারপরও কেন তারা ভারতবর্ষে ব্যাপক ভাবে ইসলাম ধর্ম প্রচার করতে পারেনি? এর কারণ কি তাদের ঈমানী দুর্বলতা বা ঈমানহীনতা? 
হ্যা! আমার মতে এটিই কারণ৷ আকবর ও শাহজাহানদের ইতিহাস পড়লে আমার তাই মনে হয়৷ 
দ্বিতীয় মোগল সম্রাট অভিশপ্ত আকবর হিন্দু মেয়ে বিয়ে করেছিল এবং ইসলামকে ধ্বংস করে সকল ধর্মের সমন্বয়ে দীনে ইলাহী নামে একটি জগাখিচুড়ী মার্কা ধর্ম প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল৷
কিন্তু মহান আল্লাহ্‌ মুজাদ্দিদে আলফেসানী সাইয়েদ আহমদ সারহিন্দীকে আকবরের এই নষ্টামির মোকাবিলা করার জন্য নির্বাচিত করেন৷ ফলে দীনি ইলাহী ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়৷
অন্যদিকে আকবরের নাতি সম্রাট শাহজাহানের কান্ড দেখুন৷ তিনি সরকারি সম্পদের কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে মৃতা স্ত্রী মমতাজ মহলের কবরে কথিত তাজমহল নির্মাণ করেন৷ অথচ এই টাকা দিয়ে তিনি যদি হিন্দুদের মাঝে ইসলাম প্রচারের দায়িত্ব পালন করতেন, তাহলে আজ মোদি সরকার তাদের হিন্দুত্ববাদের ভিত শক্তকরণে তাজমহল থেকে অর্জিত আয়ের হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করতে পারতো না৷ 
উল্লেখ্য, আগ্রার তাজমহল ভারত পর্যটনকারী কোটি মানুষের প্রধান আকর্ষণ৷ পর্যটকদের ওখানে প্রবেশ করতেই শুধু ৬০০ টাকা গুনতে হয়৷ এর বাইরে তাদের কাছ থেকে আসা অন্যান্য আয়তো আরো অনেকগুণ বেশী৷
-
সত্য হলো, ১৯৪৬ সালে ভারতবাসী বৃটিশদের গোলামী থেকে মুক্তি লাভ করেছে বলা হলেও মূলত এরপর এই গোলামী মানসিকতা তাদের মাঝে আরো বৃদ্ধি পাওয়া ছাড়া কমেনি৷ ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ এখনো চলে বৃটিশদের তৈরি কলোনি আইন দ্বারা৷
-
পাকিস্তান আমলে বৃটিশ সরকার তাদের দেশে ভারত, পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্বপাকিস্তান (বর্তমানে বাংলাদেশ) থেকে শ্রমিক বা গোলাম নেওয়ার চেষ্টা করে৷ পূর্বপাকিস্তান থেকে অপেক্ষাকৃত দরিদ্র সিলেট অঞ্চলে ফরম বিতরণ করা হয়৷ দরিদ্র সিলেটীদের অনেকে সেই ফরম পূরণ করে৷ পরে চট্টগ্রাম হয়ে পানির জাহাজে করে তাদেরকে বৃটেন নিয়ে যাওয়া হয়৷ 
মূলত এই শ্রমিকরাই ছিল সিলেট অঞ্চলের লোকদের বৃটেন প্রবাসী বা অভিবাসী হওয়ার আসল কারণ৷
-
আজ খবর পেলাম, একজন পাকিস্তানী বংশদ্ভূদ মুসলমানকে বৃটেনের অর্থমন্ত্রী বানানো হয়েছে৷ এর আগে লন্ডনের মেয়র হয়েছে আরেক পাকিস্তানী বংশদ্ভূদ মুসলমান, যে নাকি গেয়িস্টদের সমর্থক৷৷ তারও আগে ২০০৪ সালে সিলেটী বংশদ্ভূদ আনোয়ার চৌধুরীকে বাংলাদেশে বৃটিশ হাই কমিশনার পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল৷
-
তবে যে যাই বলুন, এসব লোক মুসলিম হলেও মুমিন হওয়ার যোগ্য নয়৷ সত্য হলো, জন্মগত ভাবে বৃটিশদের গোলাম/চাকর এসব মুসলিমরা ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা ফজলে হাসান আবেদের মত ভয়ঙ্কর ভাবে সেক্যুলার৷ আর তা না হলে তাদের ওই স্থানে যাওয়ার কোনো সুযোগ হতো না৷ 
ঈমানের কথা হলো, ডক্টর ইউনুস বা ফজলে হাসান আবেদদের মেধা, পদ, সম্মান কিংবা আত্মমর্যাদাবোধহীন লাখো মুসলমানের ইউরোপের অভিবাসী হতে পারার মধ্যে যেমন ইসলামের কোনো উপকার নেই; তেমনি এতে মুমিনদের আনন্দিত হওয়ারও কিছু নেই৷ 
-
আমার পাঠকদের অবগতির জন্য বলছি, আর্জেন্টিনার সাবেক প্রেসিডেন্ট (১৯৮৯-১৯৯৯) কার্লস মেনেম Carlos Menem একজন সিরিয়ান মুসলিম দম্পতির (শাওল মুনইম+মাহীবা আকীল) ছেলে৷ তার পিতা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় জীবিকার সন্ধানে আর্জেন্টিনা চলে গিয়েছিল৷ কিন্তু তারা গতানুগতিক ও আত্মমর্যাদা বোধহীন মুসলিম হওয়ায় ছেলে তাঁর মুসলিম পরিচয় হারিয়ে ফেলে এবং সেখানকার সমাজ ও রাজনীতির সাথে পুরোপুরি মিশে গিয়ে দেশটির সর্বোচ্চ ক্ষমতার পদে আসীন হয়৷ 
-
সার কথা, ইসলাম তথাকথিত কোনো ধর্ম নয়৷ এটি আল্লাহ্‌র মনোনীত মানবজাতির জান্নাতমুখী একটি জীবন ব্যবস্থা৷ যেসব লোক মনে-প্রাণে এই জীবন ব্যবস্থায় বিশ্বাস রাখবে, তারাই কেবল প্রকৃত মুসলিম৷ ডক্টর ইউনুস ও ফজলে হাসান আবেদের মত লোকজন মানুষ হিসেবে অনেক যোগ্য ও ভালো হতে পারে৷ কিন্তু তারা কখনো মুমিন মুসলিম নয়; তারা নামধারী তথা ভূয়া মুসলিম৷ একই অবস্থা হাসিনা-খালেদার মত সেক্যুলার রাজনীতিকদেরও৷ 
---
মহান আল্লাহ্‌ আমাদেরকে ইরজাঈ চিন্তা ও হীনম্মন্যতা থেকে মুক্ত সবল ঈমানের মুসলিম হওয়ার তৌফীক দান করুন৷
-
আবুল হুসাইন আলেগাজী
সদর লোহাগাড়া, চট্টগ্রাম৷
কাফির রাষ্ট্রে মুসলিম অভিবাসন ও মন্ত্রীত্ব নিয়ে কিছু কথা কাফির রাষ্ট্রে মুসলিম অভিবাসন ও মন্ত্রীত্ব নিয়ে কিছু কথা Reviewed by mohhamad noor hossain on July 27, 2019 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.
Icons made by Roundicons from www.flaticon.com is licensed by CC 3.0 BY